এবার বর্ণিল উৎসবে নতুন বছর ২০২৪ বরণ করে নিয়েছে বিশ্ববাসী। বাংলাদেশেও বছরটিকে স্বাগত জানানো হয়েছে নানাভাবে। নুতন বছরে একে অন্যকে শুভেচ্ছা জানানো একটি সুন্দর রীতি। তবে বাংলাদেশে বছরের প্রথম দিনে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি আরেকটি বিষয়ে শুভেচ্ছা জানানোর আধিক্য দেখা যায়।
আর সেটি হলো জন্মদিনের শুভেচ্ছা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এই যুগে ফেসবুকে যে কারো বন্ধু তালিকায় বছরের এই দিনটিতেই সবচেয়ে বেশি মানুষের জন্মদিন দেখা যায়। এমনকি বাংলাদেশের জন্ম নিবন্ধন বা পাসপোর্টের জন্ম তারিখ যাচাই করলে দেখা যাবে, বছরের অন্যান্য দিনের তুলনায় অনেক বেশি মানুষের জন্ম তারিখ ১ জানুয়ারি।
কেন এইদিনে এত মানুষের জন্মদিন, সে বিষয়ে কোনো গবেষণা নেই। তবে বিভিন্ন জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের জন্ম তারিখের ক্ষেত্রে দেখা গেছে জানুয়ারির এক তারিখের প্রাধান্য রয়েছে। শিশুদের নিয়ে কাজ করেন, এমন বিশেষজ্ঞরাও এই প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন।
এ বিষয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, “বিষয়টি এমন না যে, জানুয়ারির এক তারিখে বেশিরভাগ শিশুর জন্ম হচ্ছে। আসলে এখনও আমাদের দেশের বেশিরভাগ শিশুদের জন্ম হয় বাড়িতে, বিশেষ করে যারা গ্রামীণ এলাকায় থাকে। সেখানে এখনও শিক্ষার হারটা ততটা ভালো না।
ফলে অভিভাবকরাও জন্ম নিবন্ধনের ব্যাপারে ততটা সতর্ক নন। আবার আমাদের জন্ম নিবন্ধনও সঠিকভাবে সঠিক তারিখে হয়না। বাড়িতে বা হাসপাতালে জন্ম নেওয়া শিশুদেরও ঠিকভাবে নিবন্ধন হচ্ছে না। পরবর্তী একসময় যখন তারা স্কুলে ভর্তি হয় বা কোনো সার্টিফিকেট পরীক্ষার সময় তার জন্ম তারিখটা দরকার হয়ে পড়ে।”
তিনি আরও বলেন, “তখন অনেক সময় স্কুলের শিক্ষকরা ইচ্ছেমত একটি তারিখ বসিয়ে দেন। নতুন করে জন্মদিন বসাতে গিয়ে তারা একটি কমন তারিখে জন্মদিন বসিয়ে দেন, যা সহজে মনে রাখা যায়। দেখা যায়, বেশিরভাগ সময়েই সেটা জানুয়ারির ১ তারিখ হয়ে থাকে। এ কারণে দেখা যায় এখানে এটা খুবই কমন যে, বেশিরভাগ মানুষের দুইটা করে জন্মদিন থাকে।”
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানেও এই প্রবণতা রয়েছে। তবে শিশু বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান জানান, অনেকের জন্মতারিখ বানিয়ে দেওয়া হলেও, এই তারিখেও কিন্তু সত্যিকারে বাংলাদেশে অনেক শিশুর জন্ম হচ্ছে, যাদের জন্মদিন আসলেই ১ জানুয়ারি।